দীঘিনালায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পার্বত্য অঞ্চল
খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা উপজেলার বাবুছড়া এলাকায় নবগঠিত ৫১ বিজিবি’র জোন সদরের ব্যাটালিয়ন স্থাপনকে কেন্দ্র উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম। দেশের ১২৯ কি: মি: অরক্ষিত সীমান্তকে পাহারা দিতে ব্যাটালিয়ন স্থাপন জরুরী হয়ে পড়লেও আঞ্চলিক দলগুলোর প্রকাশ্য বিরোধিতায় সৃষ্ট আন্দোলন দিন দিন সহিংসতার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামকে।
মঙ্গলবার ৬টায় ঘটে গেল বিজিবি-উপজাতীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের লঙ্কাকাণ্ড। সদর দপ্তর নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উপজাতি ও বিজিবি’র ৬ সদস্য সহ আহত হয়েছে ২০জন। জনমনে বিরাজ করছে অজানা আতংক।
বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপনে পাহাড়ী সংগঠনগুলোর আন্দোলন চলমান থাকলেও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে স্থানীয় প্রশাসন কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে তাও বিজিবি-উপজাতীয়দের হামলা, সংঘর্ষের কারনে প্রশ্নবিদ্য! সচেতন মহল মনে করেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। স্থাপনা নির্মাণে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ও দেশ-বিদেশী সংস্থাগুলো থেকে সৃষ্ট ঘটনার জের ধরে সহযোগিতার সুবিধা নেওয়ার প্রচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে একটি কু-চক্রি মহল।
অভিযোগ রয়েছে, দিঘীনালা উপজেলার উত্তপ্তকে ছড়িয়ে দিতে এচক্রটি সক্রিয় ও মরিয়া হয়ে উঠেছে। উপজাতিদের ভূমি জবরদখল করছে বিজিবি এ ইস্যুতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম। তবে অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে ব্যাটালিয়ন স্থাপনে বিজিবি’র নৈতিকতা থাকলেও বিজিবি সদস্যদের উপর হামলার কারনে উপজাতীয়দের সাহসিকতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলায় আলোচনা হচ্ছে। এঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে ঘটনার পর দিন দুই শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দিঘীনালা থানায় মামলা করলেও বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি উপজাতীয় তিনটি সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। উপজাতিদের উপর হামলার প্রতিবাদে ১৫জুন (রবিবার) খাগড়াছড়িতে অর্ধ-দিবস সড়ক অবরোধ ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিজিবি সদস্যরা ক্যাম্প স্থাপনের কাজ করার সময় স্থানীয় উপজাতিরা বাধা দেয়। এসময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় আশপাশ থেকে উপজিাতিরা এসে বিজিবি সদস্যদের উপর হামলা করে। খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের ছত্রভঙ্গ করতে কয়েক রাউন্ড গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত: বাবুছড়া এলাকায় বিজিবির একটি ব্যাটালিয়ন স্থাপনের জন্য ১৯৯১ সালে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। চলতি বছরের ২২ মে বাবুছড়া বিজিবি ব্যাটালিয়নের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আনুষ্ঠানিকভাবে বাবুছড়াতে পালন করা হয়। এরপর থেকে স্থানীয় পাহাড়িরা বাবুছড়ায় বিজিবির সদর দফতর স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিয়ে পাহাড়ী প্রতিনিধিদের সাথে বিজিবি কর্মকর্তাদের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, অধিগ্রহনের জন্য প্রস্তাবিত জায়গার যে অংশ নিয়ে আদালতে রীট আবেদন করেছে সে জায়গা বাদ দিয়ে জেলা প্রশাসন বিজিবিকে জায়গা হস্তান্তর করেছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।