উত্তর জনপদের ৫০ হাজার মৎস্য চাষীর লোকসান গুণতে হচ্ছে
জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষেও টানা বৃষ্টির দেখা মিলছে না উত্তরজনদে। বৃষ্টির আশায় থেকে শেষ পর্যন্ত রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৫০ হাজার মৎস্যচাষীর মাথায় হাত পড়েছে। এসব মৎস্যচাষীরা নিজস্ব এবং ও সরকারি-বেসরকারি পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করতে না পেরে হতাশায় দিন গুণতে হচ্ছে।
জানা যায়, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় কমপক্ষে ৫০ হাজার পরিবার প্রকৃতি নির্ভর বৃষ্টিতে ১ লাখ ১০ হাজার পুকুর, খাল-বিল-ডোবায় মাছ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। বৃষ্টির পানি নির্ভর এসব পুকুরে চলতি মৌসুমের জ্যৈষ্ঠ মাসেও পানি জমা না হওয়ায় এখন পর্যন্ত কেউই মাছ চাষ করতে পারেননি।
তাছাড়া কয়েকদিন পরেই আষাঢ় মাস তখন মাছের পোনা ছেড়েও কোন লাভ হবে না এবং বন্যার ঝুকিতে পড়তে হবে চাষীদের। কিন্তু এসব মৎস্য চাষীরা তাদের পুঁজি দিয়ে বছরের জন্য পুকুর ইজারা নিলেও চলতি বছরে কোন মুনাফা না পাওয়ায় হত্যাশায় দিনাতিপাত করছেন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী আকতারুজ্জামান জানান, একটি হাইস্কুলের পুকুর ৪০ হাজার টাকা নিয়ে দেড় বছরের জন্য ইজারা নিয়েছি; কিন্তু এখন পর্যন্ত মাছ ছাড়তে না পেরে পুরো টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে। সাঘাটার মাঝি পাড়ার বিকাশ চন্দ্র জানান, মাছ চাষ করেই এই গ্রামের ৫০ পরিবারের জীবন-জীবিকা চলে কিন্তু এ বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সারা বছর চলা কঠিন হবে বলে দাবী করেন। ফুলছড়ি উপজেলার তুষার মিয়া জানান, ৪০ জন মিলে একটি বিলে মাছ চাষ করি। কিন্তু এ বছর বিলে পানি না জমায় মাছ ছাড়ার সম্ভাবনা সম্পূর্ণভাবে শেষ।
গাইবান্ধা জেলার অফিস সুত্রে জানা যায়, বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল পুকুরগুলোতে মাছ চাষ না হওয়াতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম মাছ উৎপাদন হয়েছে; অনেকেই আবার স্যালো মেশিন দিয়ে পানি দিয়ে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
উত্তরাঞ্চল ভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণ উন্নয়ন কেন্দ্র-জিইউকে’র প্রধান নির্বাহী জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মৎস্যচাষী ও মৎস্যজীবীদের পরিবারে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রকৃতির উপর অনেক কিছুই নির্ভর করা যাচ্ছে না। এই পেশার সাথে সম্পৃক্তদের ভাবতে হবে, আসলে এ ধরণের পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিতে হবে বলেও তিনি জানান।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।