যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে পাবনার সুজানগর উপজেলার সোমবার ‘সাতবাড়ীয়া গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শোক র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি সাতবাড়ীয়া বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সাতবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজ স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিষ্ঠান সমূহের আয়োজনে সাতবাড়ীয়া কলেজের স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার আজিজুল হক আরজু, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাথেন, সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবিব, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস, এম সামছুল আলম, সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহমেদ ফিরোজ কবির, অধ্যক্ষ ফজলুল হক, থানা অফিসার ইনচার্স হাবিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের রোকন, সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর রহমান, আমজাদ আলী বিশ্বাস খোকন ও সাতবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন উপজেলা কমান্ডার আব্দুল মজিদ ও অধ্যাপক মোতাহার হোসেন। এর আগে সকালে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারের প্রতিটি দোকানে কালো পতাকা উত্তোলন ও প্রতিটি মানুষ কালো ব্যাচ ধারণ করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১২ মে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সাতবাড়িয়ার কুড়িপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, কাচুরী, তারাবাড়ীয়া, ফকিৎপুর, নারুহাটি, কন্দর্পপুর, সিন্দুরপুর, হরিরামপুর, ভাটপাড়া এবং গুপিনপুরসহ ১৫ থেকে ২০টি গ্রামে হামলা চালিয়ে গণহত্যা করে। সাতবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ফজলুল হক জানান, পাকসেনারা ওই দিন মহি উদ্দিন, সমির সাহা, ওয়াজেদ আলী, বাসুদেব, আব্দুল কদ্দুস এবং সেকেন্দার আলীসহ নাম না জানা প্রায় ৮শ’ নারী-পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এদের মধ্যে প্রায় ২শ’ জনের লাশ পার্শ্ববর্তী পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। এ ছাড়াও হানাদার বাহিনী গণহত্যা করার পাশা-পাশি গোটা ইউনিয়নে ব্যাপক লুটপাট, ধর্ষণ এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ চালায়।

তাই শহীদদের স্বরণে প্রতিবছর এই দিনটিকে সাতবাড়ীয়াবাসী গণহত্যাদিবস হিসাবে পালন করে আসছে।