সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবার অচলবস্থা
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশ্রয় স্থল। কিন্তু সেখানে রোগী আছে, বেড আছে, রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বিভাগও রয়েছে। নেই শুধু চিকিৎসক, নার্স আর চিকিৎসা সেবা। সেখানে আছে শুধু রোগীদের হতাশা আর দীর্ঘশ্বাস। এ কারণে রোগীরা বছরের পর বছর চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ হাসপাতাল থেকে।
জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৪ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য কাগজ কলমে ৫০ শর্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে জনবল সংকট এবং চিকিৎসা সেবার অচলাবস্থা লেগেই আছে বছরের পর বছর। এখানে বিভিন্ন পদে ১৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা সহ ৪ জন মেডিকেল অফিসার কর্মরত। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় মাত্র ৩ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে মঙ্গাপ্রবণ ও নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকা হিসেবে চিহিৃত সাঘাটা উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যেন সোনার হরিন। কাল ভদ্রে কেউ যোগ দিলেও নিতান্তই তা কাগজে-কলমে। কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আগেই তদবির করে শহরে বদলী হয়ে যান। আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (গাইনি), মেডিকেল অফিসার (শৈবিবি) সহ ১৫ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া সহকারী সার্জন ৯ জন, নার্সিং সুপার ভাইজার ১ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ২ জন, সহকারী সেবক ১ জন সহ বিভিন্ন পদে লোক শূন্য রয়েছে। প্রতি দিন ৫ শতাধিক রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছে।
প্রভাবশালী রোগীরা বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করলেও সাধারণ রোগীদের ভোগান্তির শেষ নেই। এমনি অচলাবস্থা সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেন কখনও শেষ হবার নয়।সম্প্রতি সরে জমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, অসংখ্য রোগীর ভির। রোগীদের টোকেন দিচ্ছেন ১ জন হারবার এ্যাসিস্টেন্ট। হাসপাতালে রোগীদের ওয়াড গুলো দুর্গন্ধে ভরা। পানীয় জলের সুব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন বিভাগের কক্ষ গুলো তালা ঝুলছে। এক্সরে মেশিন বিকল। জেনারেটর মেশিন থাকলেও তা চালানো হয় না। বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকারেই থাকতে হয় রোগীদের। এসময় সার্জিক্যাল কাজ করতে হয় মোমবাতির আলো দিয়ে। হাসপাতালে খাবারের মান ভাল নয়। বাহির থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে খেতে হয় রোগীদের।
অভিযোগ রয়েছে জেনারেটর বন্ধ থাকলেও প্রতি মাসে কেরোসিনের ব্যয় দেখানো হচ্ছে। হাসপাতাল উন্নয়নে প্রতি বছর বরাদ্দ পেলেও তা ব্যয় করা হয় না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অব্যবস্থাপনা এবং দূর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছেন এলাকাবাসী।
সাঘাটা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমিতুল হক নয়ন বলেন, সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে ভাবে চলছে তা সম্পূর্ণ অমানবিক ও মোটেও কাম্য নয়।
সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ সুলতান আহমেদ জানান, হাসপাতালের শূন্য পদ পুরনের জন্য উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট বহুবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন ফল হচ্ছে না।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।