গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কে চলছে অবৈধ যানবাহন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় রংপুর-বাগুড়া এবং গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর মহাসড়কসহ পৌর এলাকার সব সড়কেই শ্যালো ইঞ্জিন চালিত তিন চাকার যানবাহন ভটভটি চলাচল অব্যাহত রয়েছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অবৈধ এই যানবাহন চলাচল বন্ধ হচ্ছে না।
অভিযোগ রয়েছে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই এবং নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে অবৈধ ভটভটি এবং নসিমন, করিমন, আলমসাধু এবং গ্রামবাংলা নামের এই যানবাহনটি ব্যাপক হারে চালানো হচ্ছে।
শ্যালো ইঞ্জিন চালিত এই যানবাহনের বিকট শব্দে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তদুপরি এই অবৈধ যানবাহনটি হাইড্রলিক ব্রেক কিংবা গ্রিয়ার নেই।
এ ছাড়া লাইসেন্স বিহীন অদক্ষ ড্রাইভাররা এসব গাড়ি চালাচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়তই নানা দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে অসহায় মানুষ। এই যানবাহনের আধিক্যের কারণে গোবিন্দগঞ্জের প্রতিটি সড়কে সীমাহীন যানজটে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে।
অভিযোগ রযেছে স্থানীয় প্রশাসনের গাফলাতি ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ হচ্ছে না। আর প্রশাসনকে ম্যানেজ করার নামে শ্রমিক সংগঠনের নেতারা গাড়ি প্রতি মোটা অংকের টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবৈধ এসব যান্ত্রিক যানের সরকারী কোনো রেজিষ্ট্রেশন না থাকায় সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হয়নি। উপজেলার সবকয়টি সড়ক মহাসড়কে শত শত লাইসেন্স ও ফিটনেস বিহীন অবৈধ যান চলাচল করছে এবং প্রতিদিনই এর সংখ্যা বাড়ছে।
গাইবান্ধার জেলার মোটরযান অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, রোড পারমিট ছাড়া যানবাহন চলাচল বেআইনি। কিন্তু অবৈধ যানবাহনের মালিকরা রোড পারমিট কিংবা রেজিস্ট্রেশনের জন্য অফিসে আসেন না। রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৫ হাজার টাকা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ী চালানোর জন্য ৫ শত টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে। সর্বশেষ হাইকোর্ট থেকে এসব যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদ আলম জানান, লাখ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়ে সরকার কৃষি কাজের জন্য ট্রাক্টর আমদানী করছে। কিন্তু তা দিয়ে দিনরাত মালামাল পরিবহন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষি কাজ ছাড়া সাধারণ পরিবহন কাজে এ সব যানবাহন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
তিনি আরো বলেন, ৭০ ডেসিবল পরিমান শব্দ মানুষের জন্য সহনীয়। কিন্তু এ সব যানবাহন ১২০ থেকে ১৩০ ডেসিবল শব্দ ব্যবহার হয়ে থাকে। ফলে এসব যান মানুষের শ্রবন শক্তির ক্ষতি করে থাকে।
পৌর শহরের নসিমন চালক ফিরোজ মিয়া বলেন, নসিমন চালানো অবৈধ হলেও আামরা গরিব মানুষ। লেখাপড়া করিনি বলে আমরা চাকরি পাইনি তাই নসিমন চালিয়ে আয় করে খাই।
নাম প্রকাশ না করা সত্বেও নসিমন চালক জানান, পুলিশকে যানবাহন প্রতি মাসিক টাকা চাঁদা দিয়ে গাড়ী চালাতে হচ্ছে। টাকা না দিলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ী, থানা থেকে গাড়ী ছাড়াতে পুলিশকে উৎকোচ দিতে হয় এবং বিভিন্ন সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা আদায়কারীরা জানান, চাঁদার টাকা পুলিশের কনষ্টেবল, এসআই এমনকি উচ্চ পর্যায়ে ভাগবাটোয়ারা হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।