- হোম
- >
- আইন-মানবাধিকার
- >
- র্যাবের সেই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
র্যাবের সেই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ
নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর অবসরে পাঠানো র্যাবের সেই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দণ্ডবিধি বা বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে বলা হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।
সেই তিন কর্মকর্তা হলেন র্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সাবেক প্রধান লে. কমান্ডার এম এম রানা। তিন কর্মকর্তার মধ্যে সেনাবাহিনীর দুজনকে অকালীন এবং নৌবাহিনীর একজনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়।
সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে নিহত বা খুনের শিকার আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী সংগঠনের পক্ষে নির্বাহী সভাপতি মাহবুবুর রহমান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রিট আবেদন করেন।
রিটে সাতজনকে অপহরণের পর খুনের ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।
আদালত শুনানি নিয়ে ওই আদেশের পাশাপাশি রুলও দেন। রুলে জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিদ্যমান আইন সংশোধন কেন হালনাগাদ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় আইনের দুর্বলতা সংশোধন, দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, জনপ্রশাসন সচিবসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালত বলেছেন, ইতিপূর্বে হাইকোর্টের যে বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছেন, সেই বেঞ্চেই একসঙ্গে বিষয়টির শুনানি হবে।
শুনানিতে কামাল হোসেন বলেন, সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্র যথাযথ ভূমিকা পালন করবে বলে সংবিধান নিশ্চয়তা দিয়েছে। বেঁচে থাকার অধিকারই মৌলিক অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে মৌলিক।
“এ ব্যাপারেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। শুধু এই ২৭ এপ্রিলের ঘটনাই নয়, এর আগেও বিনাবিচারে হত্যা, খুন ও গুমের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনায় অনেকের লাশ পাওয়া গেছে। অনেকের যায় নাই।”
তিনি বলেন, হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ রুল ইস্যু করেছিল। কিন্তু সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকার রক্ষায় নির্দেশনা প্রয়োজন। সংবিধানের অভিভাবক হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট সেই দায়িত্ব পালন করতে পারে।
“অতীতে এ ধরনের বিনাবিচারে হত্যা, গুম ও খুনের ঘটনার পর এগুলো আর ঘটবে না বলে আমরা নানা প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হয় নাই।
“আইনে কোনো ঘাটতি থাকলে সেগুলো উন্নত করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আইন করতে হবে।”
উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহূত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। এর তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যায় একে একে ভেসে ওঠে সাতজনের মরদেহ। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে নজরুলের পরিবার।
গত রোববার নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ছয় কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাবের তিন কর্মকর্তা ওই সাতজনকে অপহরণ ও খুন করেছেন।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।