সাত খুনের মামলার গণশুনানি ১২ ও ১৫ মে
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ১২ মে সোমবার ও ১৫ মে বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গণশুনানি করবে।
ওই দুই দিন সকাল ১০টায় ওই গণশুনানি শুরু হবে বলে জানা গেছে। গণশুনানিতে সাক্ষ্য দিতে আগ্রহী ব্যক্তিদের নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসতে অনুরোধ জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ শনিবার তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন এ তথ্য জানান।
নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে হত্যার ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি শনিবার নিহত সাতজনের স্বজনদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে। শনিবার সকাল ১১টা থেকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহামুদুর রহমানের কার্যালয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথমেই সাক্ষী দেন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নিহত নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা। তার পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, ভাই সালাম ও শ্বশুর শহীদুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন। নিহত মনিরুজ্জামান স্বপনের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন তার বাবা মুক্তিযুদ্ধা হায়দার আলী খান, স্ত্রী মোর্শেদা বেগম, ভাই রিপন, দুই মেয়ে স্বর্ণা ও মাহি।
অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন দুই মেয়ে ও জামাই। তারা হলেন : চিকিৎসক সুস্মিতা সরকার, তার স্বামী রঞ্জিত দেবনাথ, সেজুতি সরকার, তার স্বামী ও চন্দন সরকার হত্যা মামলার বাদী চিকিৎসক বিজয় কুমার পাল। তাজুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছেন তার মা তাসলিমা, বাবা আবুল খায়ের, ভাই সাইফুল ইসলাম রাজু। সিরাজুল ইসলাম লিটনের পরিবারের পক্ষে তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম, ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম মিন্টু। জাহাঙ্গীরের পরিবারের পক্ষে তার আট মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী সামসুন্নাহার নুপুর, মা মেহেরুন, ভাই শাহজাহান সাজু, শাহবুদ্দিন। ইব্রাহিমের বাবা আবদুল ওহাব মিয়া, স্ত্রী অনুফা বেগম, ছেলে রনি, বোন রহিমা, ভাগ্নে শাকিল। তারা সবাই জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে অবস্থান করছেন।
এর আগে ৮ মে নারায়ণগঞ্জে ঘটনাস্থল ও লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেন কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান শাহাজান আলী মোল্লা নেতৃত্বে কমিটি নারায়ণগঞ্জে পরিদর্শন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন : জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল কাইয়ুম সরকার, আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, আইন ও বিচার বিভাগ ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, মিজানুর রহমান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিকুর রহমান, সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার।
এর আগে আদালতের নির্দেশে বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনায় র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহজাহান আলী মোল্লাকে প্রধান করে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র্যাবকে দিয়ে সাতজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নিহত প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের পরিবার। পরে র্যা বের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন নজরুলের শ্বশুর সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে দিনে দুপুরে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। ওই দিন সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে আপহৃত নজরুলের গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এর পর গত বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শীতলক্ষ্যা নদী থেকে অপহৃতদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।