শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রাখল বার্সা
ভিয়ারেলের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের দারুন এক জয় দিয়ে লা লিগায় শিরোপা ধরে রাখার লড়াইয়ে নিজেদের আশা টিকিয়ে রেখেছে বার্সেলোনা। ভিয়ারেলের মাঠ এল মাদ্রিগালে অবশ্য ম্যাচটিকে ঘিড়ে ছিল কাতালান সমর্থক ও খেলোয়াড়দের আবেগ। ক্লাবের সাবেক কোচ টিটো ভিলানোভাকে স্মরণ করতে গিয়েই সকলে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।
দিনের অপর ম্যাচে এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয় তুলে নিলেও ১৮ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত লীগ শিরোপা জয়ের স্বপ্নে এখনো চালকের আসনেই রয়েছে।
ম্যাচ শুরুর আগে ভিলানোভার স্মরনে কাতালানরা এক মিনিট নীরবতা পালন করে। কিন্তু কানি এবং মানু ট্রিগুয়েরোসের দুই গোলে স্বাগতিকরা যখন এগিয়ে যায় তখন তাদের সেই আবেগের সাথে হতাশাও মিশে যায়। একইসাথে মৌসুমে ষষ্ঠবারের মত লীগে পরাজয়ের ক্ষণ গুনতে থাকে বার্সা সমর্থকরা। তবে গ্যাব্রিয়েল এবং মাতেও মুসাচিওর আত্মঘাতির গোলের পরে লিয়নেল মেসির গোল শেষ পর্যন্ত বার্সাকে পরাজিত হতে দেয়নি। এই জয়ে বার্সার থেকে এখনো চার পয়েন্ট এগিয়ে এ্যাথলেটিকো টেবিলের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। হাতে রয়েছে তিনটি ম্যাচ। এদিকে একদিনের ব্যবধানে আবারো রিয়াল দুই পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে নেমে গেছে, হাতে রয়েছে মাত্র একটি ম্যাচ।
ম্যাচ শেষে বার্সা মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা বলেছেন, ‘আমরা দারুন খেলেছি। আমরা পুরো ম্যাচে মোটেই খারাপ খেলিনি। কিন্তু প্রথমার্ধের গোলটি আমাদের ম্যাচে প্রভাব ফেলে। এরপর যখন ব্যবধান ২-০ হয় তখন আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছি। কারন মৌসুমের শেষ পর্যন্ত আমাদের এই ধারা বজায় রাখতে হবে।’
স্প্যানিশ এই আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় আরো বলেছেন, গত দুই বছর যাবত ক্যান্সারের সাথে ভিলানোভার যে লড়াই ছিল সেটা আমাদের সামনে উদাহরন হিসেবে ছিল।
আরেকটি কঠিন সপ্তাহ সত্ত্বেও বার্সা ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই ম্যাচটি শুরু করেছিল। মেসির একটি লো শট ভিয়ারেলের গোলরক্ষক সার্জিও আসেনজো রক্ষা করার পরে জাভির প্রচেষ্টা গ্যাব্রিয়েলের শরীরে লেগে ফেরত আসে। বরাবরের মতই কাউন্টার এ্যাটাকে শক্তিশালী ভিয়ারেলও কম যায়নি। জেভিয়ার এ্যাকুইনোর শট লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন মার্ক বারট্রা। এর মিনিটখানেক পরেই জোনাথন পেরেইরার একটি ক্রস থেকে কানি প্রায় দলকে এগিয়ে দেন। প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকে বিরতির ১০ মিনিট পরে এ্যাকুইনোর কাছ থেকে বল পেয়ে হেডের সাহায্যে বার্সা গোলরক্ষক হোসে ম্যানুয়েল পিন্টোকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি ট্রিগুয়েরোস। ৬৫ মিনিটে অবশ্য ভাগ্যদেবীর সহায়তায় বার্সেলোনা এক গোল পরিশোধ করে। ডানি আলভেসের ক্রস গ্যাব্রিয়েলের গায়ে লেগে জালে জড়ালে বার্সেলোনা নড়েচড়ে বসে।
ব্রাজিলিয়ান এই ডিফেন্ডার কিছুক্ষণের মধ্যে একটি হতাশাজনক ঘটনার স্বীকার হন। কর্ণার করতে গিয়ে তার দিকে গ্যালারি থেকে কলা ছুঁড়ে মারা হয়। কিন্তু ম্যাচে অবশ্য এই ঘটনা কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং আলভেসের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে আবারো আত্মঘাতি গোলের লজ্জায় ডুবে ভিয়ারেল। এবার এই গোলের পিছনে ভিলেন ছিলেন মুসাচিও। আলভেসের ক্রস হেড দিয়ে বাইরে পাঠাতে গিয়ে তা জালে জড়ালে ৭৮ মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরায় বার্সেলোনা। ৮৩ মিনিটে সার্জিও বাসকোয়েট এবং সেস ফ্যাব্রেগাসের সহযোগিতায় দলের পক্ষে তৃতীয় গোল মৌসুমে নিজের ৪০ গোল পূর্ণ করলেন মেসি।
এদিকে রাওল গার্সিয়ার একমাত্র গোলে বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে এগিয়ে যাওয়া এ্যাথলেটিকো আর ধরতে পারেনি ভ্যালেন্সিয়া। ম্যাচ শেষে এ্যাথলেটিকো বস দিয়েগো সিমেয়োন বলেছেন, ‘আমাদের পিছনে দুটি অসম্ভব শক্তিশালী দল শিরোপা লড়াইয়ে টিকে আছে এবং তাদের পক্ষে সবকিছুই করা সম্ভব। এ কারনেই আমাদের পরিশ্রান্ত হলে চলবে না। প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের পরিকল্পনা ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।