নরসিংদীর মেঘনার তীরে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা শুরু
দেশ-বিদেশের বাউলদের গানে ও পূর্ণাথীদের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে নরসিংদীর মেঘনা নদীর তীরে বাউল সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা।
আজ শুক্রবার দেবতা ব্রহ্মার পূজায় (মহাযজ্ঞ) হাজার হাজার হিন্দু ধর্মালম্বী নারী-পুরুষ অংশ নেয়। তারা দেশ ও নিজের কল্যাণসহ মনোবাসনা পূরণের জন্য উপবাস থেকে গঙ্গায় (মেঘনা) পূন্যস্নান করে মহাযজ্ঞে অংশ নিয়েছে।
বাউল সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রায় ৭শ বছর ধরে মাঘী পুর্নিমায় এই মেলার আয়োজন করা হয়। আজ বাউল মেলা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক (সিআইডি) মোখলেসুর রহমান বিপিএম (বার)। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন।
বাউল মেলায় গিয়ে দেখা যায়, শহরের কাউরিয়া পাড়া এলাকায় নরসিংদীর নতুন লঞ্চ ঘাটের পাশে মেঘনা নদীর তীর বাউল ভক্ত ও পূর্ণার্থীদের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে। পাশেই বাউল সম্প্রদায়ের আখড়া ও মন্দির। বাউল ঠাকুরের মন্দিরে ভক্তরা মনোবাসনা পূরণের আশায় সারি বেঁধে ঘি প্রদীপ, মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করছে। মন্দিরের বৈঠক খানায় বসেছে বাউল গানের আসর। মেলার শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বাউল শিল্পীরা এসে এ আসরে যোগ দিয়েছেন। এবারের মেলায় যোগ দিয়েছে ভারতের কলকাতা, আসাম ও ত্রিপুরা থেকে শতাধিক বাউল।
অনুষ্ঠানকে ঘিরে মেঘনা নদীর পার ঘেষে জমে উঠেছে বিশাল মেলা। মেলায় কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরী কুটির শিল্পসামগ্রী লৌহজাত সামগ্রী, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, মিষ্টির দোকানসহ অগণিত দোকানে মহিলা-শিশুসহ সবাই কেনাকাটা করছে । এছাড়াও চরক-দোলাসহ রয়েছে নানা বিনোদন মূলক রাইড গুলোতে রয়েছে উপচে পড়া ভিড়।
বাউল মেলায় আসা আশালতা সাহা বলেন, পরিবারের কল্যান কামনা ও বিপদ আপদ থেকে মুক্তিসহ মন-বাসনা পুরনের জন্য এখানে আসি। বাউল ঠাকুরের মন্দিরে সৃষ্টিকর্তা কাছে যা প্রার্থনা করি তার পূরণ হয়।
মেলায় আগত প্রদ্যুত বাউল বলেন, বাউল ঠাকুর প্রকৃতি পূজার বার্তা দিয়ে গেছেন। এখানে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে ভালবাসা সৃষ্টি ও ধরণীর মঙ্গলার্থে প্রার্থনা করা হয়। আমরা গানের মাধ্যমে সেই বার্তাই সকলের মধ্যে পৌছে দিচ্ছি।
বাউল আখড়ার সেবায়েত ডা. প্রানেশ কুমার বাউল ঝন্টু বলেন, মেঘনার তীরে আগে এ মেলা চলতো মাস ব্যাপি। মেঘনা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় সওদাগররা বড় বড় পাল তোলা নৌকা তীরে ভিড়িয়ে এ ঘাটে পূর্নস্নান করে ঘি প্রদীপ জ্বেলে মনবাসনা পূর্ন করতে আসতেন। এখান থেকে তারা কাঠের তৈরী খাট-পালংসহ নানা গৃহস্থালী জিনিসপত্র সওদা করে নিয়ে যেতেন।
আজ শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ভাবে দর্শনার্থীরা মেলার প্রার্থনায় অংশ নিচ্ছেন। মেলাকে সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।
সাহস২৪ ডটকম-এর প্রকাশিত প্রচারিত কোনো সংবাদ তথ্য, ছবি, রেখাচিত্র, ভিডিও, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্যে প্রকাশিত মত মন্তব্যকারীর একান্তই নিজস্ব। সাহস২৪ ডটকম-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে এসব মন্তব্যের কোনো মিল নাও থাকতে পারে। মন্তব্যকারীর বক্তব্যের বিষয়বস্তু নিয়ে সাহস২৪ ডটকম-এর কর্তৃপক্ষ আইনগত বা অন্য কোনো দায় নেবে না।